মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি- নাতনিরা আমার কথায় অখুশি হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়েছে কিন্তু ৩০ লক্ষ শহীদের তালিকা নেই। ৩০ লক্ষ শহীদের পরিবার সরকারী কোটা সুবিধা পাবেন না।
১৯৮৬ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তালিকা অনুসারে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৬৯ হাজার ৮৩৩, অথচ বর্তমান সরকারের প্রথম দিকের একটি তালিকায় ২ লাখ ২ হাজার ৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশিত হয়। তাঁদের মধ্যে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন—এই মর্মে আপত্তি দাখিল হয় ৬২ হাজার। এইভাবে কোটার লোভে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা দিয়ে তালিকা ভরানো কেবল দুঃসহনীয় একটি দুর্নীতিই নয়, বরং আত্মত্যাগী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চরম অবমাননাও বটে।
বাংলাদেশের সরকারী চাকরীতে এখন ২৫৮ ধরনের কোটা আছে। বাংলাদেশের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সূত্রমতে প্রথম শ্রেণীর চাকরিতে মোট পাঁচটা ক্যাটাগরিতে কোটার ব্যবস্থা রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায়।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে চাকরীর বয়স-সীমা ৩২ কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০।
সরকারি চাকরিতে কোটা ও মেধার অনুপাত ৫৬ বনাম ৪৪ শতাংশ।
পৃথিবীর এমন কোনো দেশ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কোটা মেধাকে ছাপিয়ে যেতে পারে। আমরা পারছি। অর্থাৎ উল্টো যাত্রায় আমরাই প্রথম।
৩৮তম বিসিএসে পরীক্ষার্থী ছিল সাড়ে তিন লাখ।
নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাপদ্ধতির কারণে কেউ যদি সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২২৬তম হন, তা হলে তিনি চাকরি নাও পেতে পারেন। কেননা প্রচলিত ব্যবস্থায় ৫০০ পদের মধ্যে মেধা কোটায় ২২৫ জনকে দেয়া যাবে। কাজেই ২২৬তম হয়ে তিনি চাকরি পাবেন না। আবার কোটা থাকলে কেউ ৭০০০তম হয়েও পেয়ে যেতে পারেন চাকরি।
যেকোনো কোটার ক্ষেত্রে ক্ষমতাবানের দুর্নীতির উপায় খুজে বের করেন। ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের এই সুবিধা দেয়ার কারনে ক্ষমতাবানেরা বড় ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকে। আজকাল সরকারি কর্মকর্তাদের আর কর্মচারী মনে হয়না, এদের আচরন রাজনৈতিক নেতাদের মত।
যে দেশে মেধার মূল্যায়ন কম সে দেশের মেধাবীরা তো বিদেশ পাড়ি দিবেই। পরে রইবে আবর্জনা।
মানসিক প্রতিবন্ধীদের কোটার ব্যাবস্থা চালু করলে দেশের মানুষ ৯০% ভাল সুবিধা পাবে। দেশে মানসিক প্রতিবন্ধী দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কিছু ক্ষেত্রে অল্প বিস্তর কোটা রাখা যায়, সেটা ভিন্ন আলাপ।
“১,৯০০ পিএইচডি-ধারী কেন বিদেশে ড্রাইভার ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাকরিতে যেতে চান (আজকের নিউজ, The business Standard. https://www.tbsnews.net/bangla/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6/news-details-232966 )।
মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তির জন্য যুদ্ধ করেছে, কোটার জন্য না।
মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে,
চাকরির জন্য না।
পশ্চিম পাকিস্তানের শোষনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, নিজ পরিবারে শোষক তৈরী করার জন্য না।
কোটা বিরোধী কথা বললে পাকি বলে গালি দিতে আসে একদল মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতি।
এদের নানা দাদারা হানাদারকে শিক্ষা দিলেও নাতিদের শিক্ষা দিতে পারেনি। তারা করেছে ত্যাগ, নাতিরা করবে ভোগ।
বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ হলে এই নাতিরা রাজাকার হওয়ার একটা প্রবল সম্ভাবনা থাকতো।
মুক্তিযোদ্ধার নাতিরা কোন পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী না, এদের সব সুযোগ সুবিধা বন্ধ হোক। এদের আমরা সম্মান করবো নানা-দাদার কর্মের জন্য।
নানা-দাদার ফল ভোগ করার আগে ৩০ লক্ষ শহীদের নাম বলতে হবে। তাদের পরিবারের সুবিধার কথা বলতে হবে।