ব্যাক্তিগতভাবে আপনি সমকামীতা পছন্দ নাই করতে পারেন তবে তাদের তাচ্ছিল্য করার অধিকার আপনার নেই। এদেশে সমকামীদের জন্য অধিকার ও আইন নেই। কেউ সমকামী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলে তাকে সামাজিকভাবে তাচ্ছিল্য করা হয়।
এজন্যই বাংলাদেশের সমকামীরা সব সময় গোপনীয়তা বজায় রাখে।
সাদা, কালো, লম্বা, খাটো, বিকলঙ্গ, হি*জড়া, সমকামী, ভিন্ন জেন্ডার সব’ই প্রকৃতির অংশ। আপনার এসব ভাল না লাগলে প্রকৃতি ও প্রভুর দোষ দিতে পারেন। মানুষের এ বিষয়ে কোন হাত নেই।
কিছু পুরুষ ও মহিলা রয়েছে যারা নারী পুরুষ উভয়ের প্রতি আকর্ষন বোধ করে। এ ব্যাপারে অল্প কিছু সামাজিক দ্বায় আছে বলে আমি মনে করি।
অনেক ছেলে মেয়েদের চেহারা খারাপ, এ কারনে নিজের ওপর ছোট থেকে সমাজিক অবজ্ঞা থেকে শুরু হয় মানষীক পরিবর্তন। তারা ভাবে আমি বিপরীত লিঙ্গের কারো যোগ্য নই। নারী-পুরুষের থেকে দূরত্বের কারনেও এসব সৃষ্টি হতে পারে। শুধু উভয়কামীর ক্ষেত্রে সামাজিক প্রভাব রয়েছে।
আমি শিশু বয়সে পুরুষের দ্বারা অনেক যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি। এর বেশিরভাগ মাদ্রাসায়।
মাদ্রাসার ছেলে ছাত্ররা বেশি উভয়কামী কেনো হয় এটা আমার কাছে স্পষ্ট হয়েছে। তারা বিপরীত লিঙ্গের কাউকে দেখাও পাপ মনে করে। এই দুরত্ব থেকেই তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় বিকৃত যৌনাচার। এখানে ধর্ম না টানাই ভালো।
সত্যকে মিথ্যা বলা নিশ্চই ধর্ম নয়।
আমি মাদ্রাসায় পড়েছি কয়েক বছর। আমি বহু মাদ্রাসা ও ছাত্রদের দেখার পরে মনে হয়েছে সব মাদ্রাসার চিত্রই এক। বিশেষ করে হাফেজি মাদ্রাসা। হাফেজি মাদ্রাসায় এতিম ও গরীব ছেলেদের গার্জিয়ান থাকে অসচেতন। এই সুযোগে বড় ছাত্র ও হুজুরেরা কাজে লাগায়।
এদের জীবনের ভবিষ্যাতে ভিক্ষাবৃত্তি ছারা কোন কিছুই শিখেনা। হাতা পাতা এদের স্বভাব হয়ে দাড়ায়। কনফিডেন্স হীনতা ও আগে উল্ল্যেখ করা কারনে এরাও এক সময় উভয়কামী হয়ে যায়।
যাই হোক প্রসঙ্গে আসি-
উভয়কামীতে সামাজিক প্রভাব থাকলেও সমকামী ও হি*জড়া(ভিন্ন জেন্ডার বুঝিয়েছি) প্রকৃতির অংশ।
তাত্ত্বিকভাবে ধারণা করা হয়, জিনগত, হরমোনগত এবং পরিবেশগত কারণসমূহের এক জটিল আন্তঃক্রিয়ার ফলে এটি ঘটে থাকে। জীববিদ্যা-নির্ভর তত্ত্বগুলোকে বেশি সমর্থন করা হয়,এর অন্তর্গত হল জিন, মাতৃগর্ভের পরিবেশ, এই দুই প্রভাবের মেলবন্ধন অথবা এই সব কিছুর সাথে সামাজিক প্রভাবের মেলবন্ধন। যৌন অভিমুখিতা নির্ধারণে যে সন্তানপালন বা শৈশবের অভিজ্ঞতার কোনো ভূমিকা আছে তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কেউ কেউ সমকামী যৌন আচরণকে অপ্রাকৃতিক মনে করলেও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, সমকামিতা মানব যৌনতার একটি সাধারণ ও প্রাকৃতিক প্রকরণ, এবং অন্য কোনো প্রভাবকের অস্তিত্ব ছাড়া এটি কোনো নেতিবাচক মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে না। যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তনের বিভিন্ন কর্মসূচীর কার্যকারিতা সম্পর্কে যথেষ্ট প্রমাণ নেই।
মহিলা সমকামীদের বোঝাতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত শব্দটি হল লেসবিয়ান এবং পুরুষ সমকামীদের ক্ষেত্রে গে, যদিও গে কথাটি প্রায়শ সমকামী মহিলা ও পুরুষ উভয়কে বোঝাতেও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়। নানা কারণে স্বঘোষিত সমকামীর সংখ্যা এবং মোট জনসংখ্যার মধ্যে সমলৈঙ্গিক সম্পর্কে আবদ্ধ মানুষের অনুপাত নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। এই কারণগুলোর মধ্যে প্রধান হল সমকামভীতি ও বিপরীতকামবাদের সমর্থনজনিত বৈষম্যের কারণে অনেক সমকামী প্রকাশ্যে তাদের যৌনতা স্বীকার না করা। অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যেও সমকামী আচরণের নিদর্শন নথিভুক্ত হয়েছে।
অনেক সমকামী মানুষ স্থায়ী পারস্পরিক সম্পর্কে আবদ্ধ আছেন, যদিও আদমশুমারির ফর্ম, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইত্যাদির আনুকূল্যে তাদের আত্মপ্রকাশের পথ নিরাপদ হয়েছে একেবারে সাম্প্রতিক কালে। মূল মনস্তাত্ত্বিক গঠনের দিক দিয়ে এই সম্পর্কগুলো বিপরীতকামী সম্পর্কের সমান। নথিভুক্ত ইতিহাস জুড়ে সমকামী সম্পর্ক এবং কার্যকলাপের প্রশস্তি ও নিন্দা – উভয়েরই নিদর্শন মেলে; কেবল প্রকাশের ভঙ্গিমা ও সংশ্লিষ্ট সংস্কৃতিজনিত তারতম্য দেখা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়েছে, যার অন্তর্গত বিবাহ, দত্তক গ্রহণ ও সন্তানপালন, কর্মক্ষেত্রে সমানাধিকার, সামরিক পরিষেবা, স্বাস্থ্য পরিষেবায় সমানাধিকার, এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক সমকামীদের নিরাপত্তার স্বার্থে অ্যান্টি-বুলিং আইন।
পশুদের মধ্যেও সমকামীতা দেখা যায়, এক্ষেত্রে ধারনা করা যায় সমকামীতাকে প্রাকৃতিক ঘটনা বলা যায়।