মাদ্রাসায় পড়াশোনা -পর্ব ০৫

পৃথিবীর মধ্যে অনেক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে, তার মধ্যে একটা ঘটনা হলো মরা বাড়িতে গিয়ে আনন্দ পাওয়া। যত বড়লোক মরা, তত বেশি আনন্দ। বড়লোক মরা মানে কোরআন খতমে বেশি বখশিশ। একদিকে মাদ্রাসার বাইরে যাওয়ার আনন্দ অন্যদিকে ভালো খাওয়া এবং টাকা পাওয়ার আশা। এই আনন্দ যে শুধু আমি পেতাম সেটা নয়, সব ছাত্ররাই পেত। যখন কাছারি ঘরে বসে কোরান খতম করতাম অথবা যেখানে কেউ নেই, তখন সবাই মিলে গল্প গুজব ও হাসাহাসি করতাম। কোরান খতম করতে সাধারনত ৪/৫ জন যেতাম। কোনদিন ৩০ পারা পড়া হয়নি, সবাই মিলে ফাঁকি দিতাম। সেই সময় শোকগ্রস্ত বাড়িতে গিয়ে কখনও শোক অনুভব করিনি।

প্রতিদিনের রুটিনে ফজরের আযানের ১ঘন্টা আগে উঠে সবাই পড়তে বসতাম। সবচেয়ে কষ্ট বেশি হতো শীতকালে। প্রচন্ড শীতের মধ্যেও ওজু করে পড়তে বসা মারাত্মক লেবেলের কষ্ট ছিলো। ঘুম থেকে ওঠার আওয়াজ হওয়ার পরও যারা ঘুমিয়ে থাকতেন তাদের দিন শুরু হতো বেতের বারি খেয়ে। ঘুমোতে যাওয়ার আগেও কিছু ছেলে প্রতিদিন মার খেতো পড়া অবস্থায় ঘুমে টক্কর খাওয়ার জন্য।

মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে গেলো। আমাকে ছুটি দেয়নি। আমার বাড়ি যাওয়া নিষেধ। একটা বড় ছাত্র এবং আমাকে মাদ্রাসা পাহাড়া দিতে রেখে হুজুর সহ সবাই বাড়ি চলে গেলো। আমি ভয় পাচ্ছিলাম ছাত্রটাকে, কারন এর আগের মাদ্রাসায় আমাকে একা পেয়ে একটা বড় ছাত্র জোড় করে বলৎকারের চেষ্টা করেছিল। “সবাই জামাতে নামাজ পরতে গেলে একজনকে মাদ্রাসায় রেখে যেতো। একবার আমি জামাতে যাইনি, মাদ্রাসায় একা, তখন সেই বড় ছেলেটা বাড়ি থেকে ছুটি কাটিয়ে মাদ্রাসায় এসে দেখে আমি একা বসে আছি। কোন কথা না বলেই আমার ওপর ঝাপিয়ে পরলো। বহুত জোড়াজুড়ি করার পর যখন সফল হলোনা তখন আমাকে চেপে ধরে রানের উপরেই বীর্যপাত ঘটালো”।

এবার যে ছেলেকে সহ আমি মাদ্রাসায় থেকে গেলাম সে বেশি বড় না আমার থেকে, তবুও ভয় পাচ্ছিলাম। ভাবছি রাতে আলাদা বিছানায় ঘুমাবো। সেই ছেলে রাত হওয়ারা আগেই আমাকে ব্যাড টাচ করা শুরু করলো। হঠাৎ চুমু দিয়ে দৌড় দিতো। প্রচন্ড মেজাজ গরম ও রাগ দেখিয়েও কোন লাভ হয়নি। তবে সে এটা বুঝতে পেরেছে যে জোড় করলে হীতের বিপরীত হতে পারে। রাতে অনেক কাকুতি মিনতি, টাকার লোভ, বন্ধু পাতানোর প্রস্তাব, এসব চেষ্টা চালিয়ে গেছে। সেই ছেলে এমন পাগলামি শুরু করছিলো যেনো আমি তার প্রেমিকা। ভাত খায়না, বসে থাকে, কথা বলেনা, চোখ দিয়ে পানি ঝড়ানোর চেষ্টা করে আমাকে ইমোশনাল ব্লাকমেইলের চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলো। সে বুঝতে পারছে জোড় করে কুলায়া উঠতে পারবে না তাই রাতে গিয়ে বাইরে বসে ছিলো। কয়েক ঘন্টা যাওয়ার পরেও যখন আসেনা তখন আমি ডাক দিলাম ঘুমানোর জন্য, তখন সে ফেইক কান্না শুরু করলো, যেনো আমার মন তার ওপর দয়া করে। আমি সব কান্নার রং চিনি। পৃথিবীতে সিনেমার চেয়ে বাস্তবে বেশি অভিনয় হয়।

দীর্ঘদিন যারা নারীদের থেকে দূরে থাকে এক সময় তারা পুরুষকেই নারী ভাবতে শুরু করে। এজন্য শুনবেন মাদ্রাসা ও জেলখানায় বলৎকারের ঘটনার হার বেশি।

Photo Credit By BBC

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *