বিবি আয়েশার আর্তনাদ

লিখেছেন পথের পথিক (ছদ্মনাম)

আয়েশা__

তিনি ছিলেন নবী মোহাম্মদের ৩য় স্ত্রী।
মোহাম্মদের সকল স্ত্রীদের মধ্যে একমাত্র কুমারী স্ত্রী।
জন্ম: আয়েশাহ বিনতে আবু বকর
আনুমানিক ৬১৩/৬১৪ খ্রিষ্টাব্দ।
তারা বিবাহ সংসার জীবন ছিলেন মাত্র ১৩-১৫ বছর।

পর্দার আড়ালে আয়েশার আর্তনাদ।

আয়েশার বিবাহ হয় ৬ বছর বয়সে।
যখন খেলার বয়স তখন তার বিবাহ হয়। আর ৯ বছর বয়সে এসে সংসার জীবন শুরু করেন।
প্রশ্ন হতে পারে “তখনকার সমাজে এই বয়সে বিবাহ স্বাভাবিক ছিলো”?
হ্যাঁ, খুবই স্বাভাবিক।
কিন্তু অ-স্বাভাবিক তখন থাকে, যখন দাবি করা হয় একজন মহামানব তার স্বামী! আরও অদ্ভুত কথা হচ্ছে, স্বয়ং আল্লাহ তাআলা নিজেই বিবাহের ব্যাপারে ঘটখালি করেছে।
ঈশ্বর কতটা বিষাদগ্রস্হ থাকলে এমন কাজ করেন!
ঈশ্বর নিজ হাতে একটি মেয়ের বাল্যকাল কেড়ে নিলো কিভাবে?

কখনো কি সমাজের দোহাই না দিয়ে ভেবেছেন, হয়তো আয়েশা তার জীবনে আরেকটু সময় পেতে পারতেন নিজেকে গোছানোর, অথবা শৈশব উপভোগ করা, পুতুলের সাথে খেলা কিংবা সহপাঠীর সাথে দুরন্তপনা।
আয়েশাকে যখন বাসর ঘরে দেয় তখনও মেয়েটি দোলনায় ছিলো।
চুলগুলো ছিলো এলোমেলো ছোট।
আবার বিবাহের পরও ডানাওয়ালা ঘোড়া নিয়ে খেলা করতো বলে জানা যায়।

একবার ভাবুন তো, একজন মহামানবের হাতে বলী হলো খেলায় মগ্ন হয়ে থাকা আয়েশার বাল্যকাল। মহা মানবের এ কেমন উদারতা?
আপনার বোন বা মেয়ে যে বয়সে পুতুল নিয়ে হাসিতে ব্যস্ত, ঠিক সেই বয়সে আয়েশা ব্যস্ত মোহাম্মদের যৌন তৃপ্তি দিতে।

এ কেমন মহা মানব ঈশ্বর থেকে প্রেরণ করা হয়েছে আমাদের জন্য? এসব ঘটনা থেকে তার উম্মত কি শিখবে? উম্মতকে শেখানোর জন্য এর চেয়ে ভাল পন্থা কি ঈশ্বরের হাতে ছিল না?

মোহাম্মদ এটা উল্লেখ করেছেন যে, কুমারী মেয়েদের যৌনতা অনেক উষ্ণ।
বুঝাই যাচ্ছে এই উষ্ণতার অভিজ্ঞতা আয়েশার কাছে থেকে হয়েছে। মোহাম্মদ পেয়েছে উষ্ণতা আর আয়েশা কি পেলো? আয়েশা যা পেয়েছে তা পৃথিবীর কোন মেয়েরই কাম্য নয়।

আয়েশার বিবাহ জীবনে অনেক সুখ না পেলেও অনেক সতীন তিনি পেয়েছেন।
ডজন খানেক সতীনের সঙ্গ খুব বেশি শখের নয় নিশ্চই।
মহামানব হোক আর মহা রাজা হোক কেউ শখ করে সেখানে সতীনের ঘর করতে যায় না।
সতীনের ঘর করতে গিয়ে কতটা হেনস্তা হয় তা আন্দাজ করেই বলা যায়।
মোহাম্মদ জয়নব বিনতে জাহশ নামে এক স্ত্রীর নিকট বেশি সময় দিতেন। এই নিয়ে আয়েশা লেগে থাকতেন।
কেনো লেগে থাকতেন তা নিয়ে পরবর্তীতে অনেক ঘটনা এসেছে।

ঘটনা যাই হউক, কোন স্ত্রী’ই তার স্বামীর ভালোবাসা ভাগ করতে চায় না।
এই একমাত্র সম্পদ যা কারো কাছে কেউ ভাগ করতে চায় না এবং বিক্রি করতে চায় না।
তবুও আয়েশাকে করতে হয়েছে।
চিন্তা করতে হয়েছে জয়নব বিনতে জাহশ এর সাথে মোহাম্মদ কি করতো। নবী মোহাম্মদ যখন অন্য স্ত্রীদের সময় দিতেন, তখন আয়েশার কি খুব ভালো লাগতো?

জানা যায় একবার তার উপর সতীত্বের অপবাদ আসে, সেই কারনে আয়েশাকে বাবার বাড়ি থাকতে হয়েছে। ওহী আসতে দেরি হলে আয়েশাকে স্বামীর ঘরে ফিরে আসতে ১ মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে।
সীতার মত সতিত্ব প্রমান করতে হয়েছে, তবে পথ কিছুটা ভিন্ন। স্বয়ং ঈশ্বর ওহী দিয়ে প্রমান করেছেন।

মোহাম্মদকে কখনো তার সতীত্বের প্রমান দিতে হয়নি।
মিথ্যা কিংবা সত্য যা’ই হউক, স্বামীর বাড়ি থেকে অপবাদ নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকা আয়েশার মনের বিরহ কি কেউ জানতে চেয়েছে? মক্কা মদিনার লোক সহ মুসলিম জাহানের সবাইকে তার সতীত্বের খবর নিয়ে আলোচনা করা নিশ্চই সুখকর ছিল না।

বাপের বাড়ির সমাজ কি আয়েশাকে সতীত্বের কারণে ছিঃ ছিঃ করে উঠেনি?
আয়েশাকে কি এই কথা শুনতে হয়নি, বেহায়া মেয়ে?
ভেবেছেন কি? কি চাপা আর্তনাদ ছিলো মনে। খুব কম বয়সে বিধবা হয়েও কোরানের নিষেধাজ্ঞার কারনে সারাজীবন সঙ্গীহীন রয়ে গেলেন। নবি মোহাম্মদ বিধবা বিয়ে করেছিলেন কিন্ত আয়েশাকে সেই সুযোগ দেয়া হয়নি।
এ এক মহা মানবের মহা বীরত্বের কীর্তি!

( লেখকের ফেসবুক প্রফাইল লিংক– https://www.facebook.com/share/E2rZQZitmvSrV6SX/?mibextid=qi2Omg )