নবী মুহাম্মাদের আমলনামা কেমন?


ভূমিকা ———-

ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী বলা হয়ে থাকে সৃষ্টিকূলের রব বিচারদিনে বিচার করবেন আমল-নামা দ্বারা। হযরত মোহাম্মদ সা: কে সৃষ্টি না করলে এই মানবসভ্যতা হতো না।
যার জন্য এত কিছু তার আমলনামা খানা কি খুব সুন্দর?

কি হবে যদি তার আমল-নামা দেখি চোখ বুলিয়ে।

প্রশ্ন জাগতেই পারে, যিনি শ্রেষ্ঠ মানব, যিনি ইসলামের প্রধান তার আমল-নামা দেখার কি দরকার আছে? অবশ্যই দরকার আছে কারন আপনার চোখে সে মহামানব হলেও আমার চোখে সে হত্যাকারি-খুনি।

মোহাম্মদের ইসলাম প্রচার জীবনে শেষে দিকে যুদ্ধবিগ্রহ নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন।
জানা যায় তার জীবনকালে ৮০টির বেশি যুদ্ধ-সংগঠিত হয়েছে। যে ধর্ম প্রচারের জন্য যুদ্ধ করে মানুষ মারতে হয় সে ধর্মের কি কোন প্রয়োজন আছে? সেই ধর্মের আমলনামা দিয়ে প্রভূ যে জান্নাতের লোভ দেখিয়েছে সে জান্নাতে যাওয়ার ইচ্ছে আমার নেই।

যুদ্ধ করার কি প্রয়োজন? প্রভূর ধর্ম প্রচার করার জন্য মানুষকে কেনো যুদ্ধ করতে হবে?
সবগুলো যুদ্ধেই কি ইহুদি এবং অন্যান্য গোত্রের লোকদের অপরাধ ছিলো?
ইহুদি ধর্ম যদি এতই খারাপ হয় তবে যিশু/ঈসাকে দিয়ে কেনো সে ইনজিল কিতাব পাঠালো?
প্রভূ আজ একটা কিতাব পাঠিয়ে কালকেই যদি বলে এই কিতাব চলবে না, নতুন কিতাব প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমার আগের অনুসারীদের মেরে ফেলো।
এটা কি কোন সুস্থ প্রভূর কাজ?

বানু কুরাইজার ৮০০-৯০০ ইহুদিরা কী দোষ করেছিল যে মুহাম্মদ তাদের হত্যার ব্যাপারে নিজের সন্তুষ্টি জানিয়েছিলেন এবং বলেছেন এটা আল্লাহরই রায়? কিভাবে এই নির্মম হত্যাযজ্ঞ দয়ালু আল্লাহ মানে বিধাতার রায় হতে পারে? এই ঘটনা বর্বরতার চরম নজির নয় কি?

নবীজির কথা অনুযায়ী — তিনি খন্দকের যখন যুদ্ধ শেষ করে মদিনায় ফিরে আসেন। সালামার ঘরে যোহরের সময় যখন আল্লাহর রাসূল গোসল করছিলেন, এমন সময় জিব্রীল (আঃ) এসে বললেন, আপনি অস্ত্র নামিয়ে ফেলেছেন, অথচ ফেরেশতারা এখনো অস্ত্র নামায়নি। দ্রুত বনু কুরায়যার দিকে অগ্রসর হউন। এখানে হজরত জিব্রাইল (আঃ) সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে বনু কুরায়যার বিরুদ্ধে যুদ্ধের নির্দেশ নিয়ে আসেন।

তখন রাসূল (সাঃ) ঘোষণা প্রচার করে দিলেন যে, ‘যারা আমার আদেশ শুনতে ও মানতে প্রস্তুত আছে, তারা যেন বনু কুরায়যায় পৌছনোর আগে আছর না পড়ে’। অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূমের উপরে মদীনার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ৩০০০ সৈন্য নিয়ে তিনি বনু কুরায়যা অভিমুখে রওয়ানা হলেন। অবশ্য ছাহাবীদের কেউ রাস্তাতেই আছর পড়ে নেন। কেউ পৌঁছে গিয়ে আছর পড়েন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কাউকে কিছু বলেননি। কেননা এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য ছিল সকলের দ্রুত বের হওয়া। অতঃপর যথারীতি বনু কুরায়যার দুর্গ অবরোধ করা হয়, যা ২৫ দিন স্থায়ী হয়।

অবশেষে তারা আত্মসমর্পণ করে এবং তাদের সাবালক ও সক্ষম পুরুষদের বন্দী করা হয় যাদের সংখ্যা ৮০০ থেকে ৯০০ এর মধ্যে ছিল। তাদের অপরাধের জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া হবে বনু কুরাইযাকে জিজ্ঞেস করলে তারা তাদের পুর্ব মিত্র আওস নেতা সা‘দ ইবনে মু‘আযের নাম বলে, সাদ যা বলবেন তাই মেনে নিবে। তিনি তাদের বিশ্বাসঘাতকতার প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ সবাইকে হত্যা করার নির্দেশ দেন,এই নির্দেশ তিনি ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ অনুযায়ী দেন অর্থাৎ ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ অনুযায়ী বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি হল মৃত্যু সে মতেই হুয়াই বিন আখত্বাব সহ সবাইকে হত্যা করা হয়।

এই নিরপরাধ শিশু, নারী সহ সবাইকে হত্যার জন্য নবীর আমলনামায় নিশ্চই জান্নাত কনফার্মের কথা লেখা হয়ে গেছে!

জানা যায় যে একদিন একদল নবী মোহাম্মদের এর কাছে ইসলাম গ্রহণ করেন স্বইচ্ছায় কিন্তু তারা অসুস্থ হলে উটের মূত্র পানের জন্য বলা হলে, পরবর্তীতে তারা ভূয়া নবী মনে করে রাখালকে মেরে উট নিয়ে পালিয়ে যায়।
নবীর নির্দেশে তাদের ধরে নেন বিচারের নামে প্রহসন করা হয়।
চোখে আগুনের উত্তপ্ত রড দিয়ে চুক্ষ উপ্রে ফেলা হয়। তাদের পানিহার পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি।
[৪২৪৬-(১০/…) আবূ জাফার মুহাম্মাদ ইবনু সাব্বাহ ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ (রহঃ) ….. আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২০৭, ইসলামিক সেন্টার ৪২০৭]

অপরাধীর এমন শাস্তি সাথে পানি পানি বলে চিৎকারের আওয়াজ কি কিরামান-কাতেবীন শুনে তা লিপিবদ্ধ করেছেন আমল-নামায়? লিপিবদ্ধ করলে নিশ্চয়ই এই নির্মম হত্যার জন্য সোয়াব লিপিবদ্ধ করেছে

নবী মোহাম্মদ বিভিন্ন যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদ ভাগ নিয়েছেন এবং নারীদের বানিয়েছেন দাসী।
যাদের দাসী বানিয়ে দাসত্ব শৃঙ্খলে আটকে রেখেছেন, তাদের কোন অভিযোগ কি শুনবেন ন্যায় বিচারক সৃষ্টিকূলের রব? না শুনবেন না, কারন তিনি নিজেই যে এই প্রহসন তৈরী করেছেন এবং বৈধতা দিয়েছেন।
নবীর আমলনামা তৈরী করছেন স্বয়ং আল্লাহ, কিন্তু নির্যাতনে ভুক্তভোগীদের আমলনামা কে তৈরী করবে?

ইহুদি কন্যা ও বনু কুরায়জার আব্দুল হাকেমের বউ রায়হানা বিনতে যায়েদ আল-কুরাযিয়াহ ও জামেলাকে যুদ্ধে বন্ধী করে দাস বানানো হয়।
তখন নবী তাকে বিক্রি করতে নিষেধ করে নিজের কাছেই রেখে দেন। পরবর্তীতে নবী তাকে বিবি হিসাবে গ্রহণ করেন।

কিনানা বিন আবি আল-হুকায়েক ছিলেন সাফিয়ার স্বামী। সাফিয়ার পরিবারকে হত্যার বর্ননা- কিনান-কে নির্যাতন ও খুন ও তাঁদের সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তগত করার পর মুহাম্মদ সাফিয়া ও তাঁর কাজিনকে তাঁর কাছে ধরে নিয়ে আসার জন্য বেলালকে আদেশ করেন। মুহাম্মদের নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা খায়বারের নিরপরাধ জনগণের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে অমানুষিক নৃশংসতায় যাদেরকে হত্যা করেছিলেন, বেলাল সেই মৃতদেহগুলোর পাশ দিয়ে সাফিয়া ও তাঁর কাজিন-কে নিয়ে আসে। এই বীভৎসতা দৃশ্যে সাফিয়ার কাজিন তীক্ষ্ণ আর্তনাদ শুরু করে, নিজ গালে চপেটাঘাত করে ও তার মাথার ওপর ধুলাবালি ছিটিয়ে বিলাপ ও ক্রন্দন শুরু করে। মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের বর্ণনায় যা আমরা জানতে পারি, তা হলো, যখন এই আর্তনাদগ্রস্ত মহিলাটিকে মুহাম্মদের কাছে ধরে নিয়ে আসা হয়, তখন মুহাম্মদ বলেন, “এই ডাইনিকে আমার কাছ থেকে দূরে সরাও!” ও অতঃপর তিনি তাঁর জামাটি সাফিয়ার ওপর নিক্ষেপ করে মুসলমানদের জানিয়ে দেন যে, সাফিয়াকে তিনি পছন্দ করেছেন।

পালিত পুত্রের বধুকে বিয়ে করেছেন যে মহামানব, সেই বধুর কি খুব শখ ছিলো শ্বশুরের বিছানা গরম করার। আল্লাহ সুরা আর আযহাবে আয়াত নাজিল করে নবীকে বিয়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
সেই নারীর কি কোন মতামত ছিল না? তার কি কোন অভিযোগ ছিলো না?
এই সব নির্যাতনের জন্য তাদের আমলনামায় কি লিখবেন আল্লাহ?

মোহাম্মদের জীবনে এত যুদ্ধের কি প্রয়োজন ছিলো এই প্রশ্নটা থেকেই গেলো।
সব গোত্রই কি মোহাম্মদের পিছু লেগে থাকতেন।
বাপ দাদার ধর্মের ওপর কে আঘাত করেছিলো?
তাদের ধর্মের ওপর আঘাত করেছিল হযরত মোহাম্মদ’ই।
জানা যায় মোহাম্মদ কাফেলা আক্রমণ করতেন, তার একটা উদাহরণ বদর যুদ্ধ।

যাদের সম্পত্তি গনিমতের নামে লুট করতেন, কিংবা কাফেলা আক্রমণ করে ভাগ নিতেন তাদের হক মারার কথা কি আমল-নামায় সোয়াব হিসেব যুক্ত হবে?

এছাড়াও বিভিন্ন হাদিসে পাওয়া যায়, নবী মোহাম্মদ কালো কুকুর/টিকটিকি মারা নির্দেশন দিয়েছেন।
যার অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে কেউ কালো কুকুর ও টিকটিকি মারলে, এই সব নিষ্পাপ অবলা প্রানীর হত্যার দায়ভার কি নবীর আমল-নামায় লিপিবদ্ধ হবে? (৩৮৭৩। হুমায়দ ইবনু মাসআদা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত।)

ন্যায় বিচারক আল্লাহ কি দেখবেন, কি অপরাধ ছিলো এই প্রানীগুলো?

স্বয়ং কুরআন এবং হাদিসে স্পষ্ট পাওয়া যায়,,
কাফেরদের হত্যা করা/মুশফিকের হত্যার কথা কিংবা ইসলামের জন্য জিহাদ চালিয়ে যাওয়া।
সবাই কালিমার উপর আনা।

এই যে অমুসলিম যারা, তাদের অপরাধ কি?
তাদের কেউ এই অযুহাতে হত্যা করলে সেই দ্বায়ভার এবং তার আমল-নামা কোথায় লিখা হবে?
কোরানের পরিষ্কার ভাষায় ইসলামে অবিশ্বাসী মানুষকে কতল করা কথা বলা হয়েছে।
(কোরানের আয়াত- ২-২১৬/ ২-২৪৪/ ৩-৫৬/ ৩-১৫১/ ৪-৭৪/ ৪-৮৯/ ৪-৯৫/ ৫-৩৩/ ৮-১২/ ৮-১৫/ ৮-৩৯/ ৮-৫৭/ ৮-৫৯/ ৮-৬০/ ৯-৫/ ৯-১৪/ ৯-২০/ ৯-২৯/ ৯-৩০/ ৯-৩৮/ ৯-৩৯/ ৯-৪১/ ৯-৭৩/ ৯-৮৮/ ৯-১১১/ ৯-১২৩/ ২১-৪৪/ ২৫-৫২/ ৪৭-৪/ ৪৭-৩৫/ ৪৮-১৭/ ৪৮-২৯/ ৬১-৪/ ৬১-১০/ ৬১-১১/ ৬২-১২/ ৬৬-৯)

কাবা ঘরে আগে ৩৬০ টা মূর্তি ছিলো, সেই মূর্তিগুলো নবীর নির্দেশেই ভাঙা হয়। অমুসলিমদের উপাসনা করতে না দেওয়া কিংবা তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করায় মোহাম্মদের কি কোন অপরাধ লিখা হবে তার আমল-নামায়। সব মূর্তি ভেঙে দিয়ে কালো পাথরের দামী জিনিসটা কেনো রেখে দিয়েছিলেন?
দামি জিনিস কি আল্লাহ পছন্দ করতেন নাকি নবী?
আজও সেই দামি পাথরে চুমু খেয়ে মুসলমানরা পাপ মোচন করেন। এই পাথরে লেগে থাকা রক্তের ইতিহাস কি মুসলমানরা জানে?

তার নির্দেশে এক পাগল নারীকে হত্যা করা হয় এই বলে যে, এই পাগলামি একটি রোগ, তাকে হত্যা করো। এই পাগলের মৃত্যুর কষ্ট কি মোহাম্মদের খাতায় লিখা হবে?

নবীর বিরুদ্ধে কবিতা লিখতেন এমন ব্যক্তিদের অপছন্দ করতে। গান/কবিতা সাহিত্য করা ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে।
তাদের রক্তের অভিযোগ কি ফেরেস্তা শুনে লিখেছেন? চিত্র শিল্পিদেরও একই ভাবে হত্যা করেছেন। (বুখারি : ৫/২২২২)

মোহাম্মদ বলেছেন, নিজ ভূমি থেকে সবাইকে উচ্ছেদ করা সহ ইহুদি বিদ্বেষ এবং হিজরাদের তৃতীয় লিঙ্গের প্রতি তার বিদ্বেষ ছিলো। তার অনুসারীরাও এমন কাজ করে বেড়ালে তার দ্বায়ভার কি নবীর কাধে পড়ে না? তার আমল নামায় যুক্ত হবে এসব?

এছাড়াও স্বধর্ম ত্যাগিদের হত্যার নির্দেশ/চুরের জন্য হাতকাটা/যুদ্ধবন্দীদের দাস বানানো/জিহাদ সহ অন্যান্য কাজের যে নির্দেশনা রয়েছে তার জন্য কি কোন দ্বায়ভার নবীর কাঁধে ফেলবেন আল্লাহ।

উপসংহার __
বিচার দিবসে নবীর আমলনামা খুলে কি বিচাঁর করবেন সৃষ্টিকূলের রব।
নাকি বিনা হিসাবে জান্নাত পুরুষ্কার দিবেন

সাধারণ ইসলামের সোর্স থেকেই দেখা যায় মোহাম্মদ এর আমলনামা কেমন।

যার কর্মজীবনে দাসী সেক্স/বহুবিবাহ/ পরকীয়া/ হত্যা করার অনুপ্রেরণা ইত্যাদি কিছু বাদ যায়নি।

তবুও এমন ব্যক্তিকে না সৃষ্টি করলে নাকি কিছুই হতো না
তিনি নাকি মহামানব।

আল্লাহর নিকট একটাই প্রশ্ন,, বিচার দিবসে ন্যায় বিচারক কূলের রব আল্লাহ কি তার প্রিয় বান্দা মোহাম্মদের আমলনামা খানা খুলে বিচার করবেন?
স্বজনপ্রীতি দেখাবেন না তো!
বিনা-হিসাবে জান্নাতে দিবেন না তো?

প্রশ্ন কি তুলবেন, মোহাম্মদ কি সত্যিই ঈশ্বর ও মানুষকে ভালোবাসতে জানতেন?
নাকি জান্নাতের উচ্চ মাকামের নামে নিজের খায়েশ মিটিয়েছেন।

তাহার সেই আমল-নামা খানা দরখাস্ত আকারে পাঠালাম সেই আল্লাহর নিকট যিনি ন্যায়বিচারক বলে পরিচিত। তিনি থাকলে আমার অভিযোগের বিরুদ্ধে সারা দিবেন। সারা না দিলে তিনি আমাদের প্রভূ নন।

(লেখকের ফেসবুক লিংক- https://www.facebook.com/share/qEBrSov8RRyxdGDB/?mibextid=qi2Omg)